চাকরি, দক্ষতা ও এক্সপার্ট ক্যারিয়ার গাইডলাইন

Join us on Telegram

Join Now

Join us on Whatsapp

Join Now

কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে? (স্টাডি গ্যাপ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন ২০২৫-২৬)

কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে: বাংলাদেশে কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে, তার কোনো নির্দিষ্ট একক নিয়ম নেই, এটি বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে ভিন্ন। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত এইচএসসি পাশের পর সর্বোচ্চ ১ বছরের গ্যাপ (সেকেন্ড টাইমার হিসেবে) গ্রহণযোগ্য, তবে অনেকগুলোতে এই সুযোগও নেই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে ভর্তির জন্য ২-৩ বছরের স্টাডি গ্যাপ এবং ডিগ্রি কোর্সের জন্য ৪-৫ বছরের গ্যাপও গ্রহণযোগ্য। অন্যদিকে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্টাডি গ্যাপের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি নমনীয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে অবশ্যই ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষের সর্বশেষ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি যাচাই করতে হবে।

Table of Contents

কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে

এইচএসসি পরীক্ষার পর পড়াশোনায় একটি বিরতি বা ‘স্টাডি গ্যাপ’ অনেক শিক্ষার্থীর জীবনেই ঘটতে পারে। কারণ যাই হোক না কেন, এই বিরতির পর সবচেয়ে বড় যে প্রশ্নটি সামনে আসে তা হলো – কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে? এই একটি প্রশ্নকে কেন্দ্র করে জন্ম নেয় অসংখ্য দ্বিধা এবং প্রায়শই ভুল তথ্যের কারণে অনেক সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীর স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়।

এই আর্টিকেলে আমরা কোনো রকম বিভ্রান্তি না রেখে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সরকারি, জাতীয় এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ও ডিগ্রিতে ভর্তির ক্ষেত্রে স্টাডি গ্যাপের সর্বশেষ এবং বাস্তবসম্মত নিয়মাবলী তুলে ধরব। এই আলোচনা আপনাকে একটি পরিষ্কার চিত্র পেতে এবং আপনার ভবিষ্যৎ শিক্ষার পথ সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে স্টাডি গ্যাপের নিয়মাবলী (২০২৫-২০২৬ সেশন)

গুরুত্বপূর্ণ দ্রষ্টব্য: এখানে প্রদত্ত তথ্যগুলো সাধারণ নিয়মের উপর ভিত্তি করে তৈরি। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর তাদের ভর্তি নীতিমালা পরিবর্তন করার অধিকার রাখে। তাই আবেদনের পূর্বে অবশ্যই নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে।

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়: কঠোর নিয়ম এবং ‘সেকেন্ড টাইমার’দের সুযোগ

দেশের শীর্ষস্থানীয় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির প্রতিযোগিতা সবচেয়ে বেশি, এবং স্টাডি গ্যাপের নিয়মও এখানে সবচেয়ে কঠোর।

  • ফার্স্ট টাইমার: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, মেডিকেল কলেজগুলোর মতো প্রথম সারির প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত শুধুমাত্র সেই বছরের এইচএসসি উত্তীর্ণ (First Timer) শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দেয়। অর্থাৎ, এখানে কোনো স্টাডি গ্যাপ গ্রহণযোগ্য নয়।
  • সেকেন্ড টাইমার: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং জিএসটি (GST) গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাধারণত এইচএসসি পরীক্ষার ঠিক পরবর্তী বছরের শিক্ষার্থীদেরও (Second Timer) ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেয়। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১ বছরের স্টাডি গ্যাপ গ্রহণযোগ্য।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়: অনার্স ও ডিগ্রির ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম

যারা কয়েক বছরের স্টাডি গ্যাপের কারণে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারেন না, তাদের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিশাল ভরসার জায়গা।

  • অনার্স কোর্স: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৪ বছর মেয়াদি অনার্স কোর্সের জন্য সাধারণত এইচএসসি পাশের পর ২ থেকে ৩ বছরের স্টাডি গ্যাপ গ্রহণযোগ্য। (যেমন, ২০২৫-২৬ সেশনে সাধারণত ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের এইচএসসি উত্তীর্ণরা আবেদন করতে পারেন)।
  • ডিগ্রি (পাস) কোর্স: ৩ বছর মেয়াদি ডিগ্রি কোর্সের ক্ষেত্রে নিয়ম আরও শিথিল। এখানে ৪ থেকে ৫ বছরের স্টাডি গ্যাপও অনেক সময় গ্রহণযোগ্য হয়।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়: সবচেয়ে বেশি নমনীয়তা

স্টাডি গ্যাপ থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সবচেয়ে বেশি উদার। বেশিরভাগ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে স্টাডি গ্যাপের কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। ইউজিসি কর্তৃক নির্ধারিত ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেই কয়েক বছরের বিরতিসহ শিক্ষার্থীরা এখানে ভর্তির আবেদন করতে পারেন।

আপনার জিজ্ঞাসিত প্রশ্নগুলোর উত্তর নিচে বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো।

কত বছর গ্যাপ দিয়ে কলেজে (অনার্স) ভর্তি হওয়া যায়?

“কলেজে ভর্তি” বলতে যদি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স কোর্স বোঝানো হয়, তবে সাধারণত এইচএসসি পাশের পর ২ থেকে ৩ বছরের গ্যাপ দিয়েও ভর্তি হওয়া যায়। তবে এটি প্রতি বছরের ভর্তি বিজ্ঞপ্তির উপর নির্ভরশীল।

৪ বছরের গ্যাপ কি বেশি? এই গ্যাপ নিয়ে কোথায় সুযোগ মিলবে?

হ্যাঁ, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে ভর্তির জন্য ৪ বছরের গ্যাপ নিঃসন্দেহে অনেক বেশি এবং এখানে ভর্তির কোনো সুযোগ নেই। তবে ৪ বছরের গ্যাপ নিয়েও আপনার হতাশ হওয়ার কারণ নেই। আপনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি (পাস) কোর্সে ভর্তির জন্য চেষ্টা করতে পারেন। এছাড়াও, প্রায় সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই গ্যাপ নিয়েও ভর্তির সুযোগ রয়েছে, যদি আপনার অন্যান্য যোগ্যতা ঠিক থাকে।

কত বছর গ্যাপ থাকলে ডিগ্রি করা যাবে?

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৩ বছর মেয়াদি ডিগ্রি (পাস) কোর্সের জন্য স্টাডি গ্যাপের নিয়ম বেশ শিথিল। সাধারণত ৪ থেকে ৫ বছর বা তারও বেশি গ্যাপ থাকলেও ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়। এটি কর্মজীবী বা বয়স্ক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি চমৎকার সুযোগ।

অনার্স শেষ করতে কত বছর লাগে?

বাংলাদেশে স্নাতক বা অনার্স কোর্স সাধারণত ৪ বছর মেয়াদি হয়ে থাকে। এই ৪ বছরে মোট ৮টি সেমিস্টার সম্পন্ন করতে হয়।

এক নজরে বিভিন্ন কোর্সে স্টাডি গ্যাপের গ্রহণযোগ্যতা

কোর্সের ধরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধরণ সাধারণ গ্রহণযোগ্য গ্যাপ (এইচএসসি’র পর)
অনার্স সরকারি (যেমন: ঢাবি, বুয়েট) ০ বছর (শুধুমাত্র поточний ব্যাচ)
অনার্স সরকারি (যেমন: জাবি, রাবি) সর্বোচ্চ ১ বছর (সেকেন্ড টাইমার)
অনার্স জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ২-৩ বছর
ডিগ্রি (পাস) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ৪-৫ বছর বা তার বেশি
অনার্স বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নির্দিষ্ট সীমা নেই (সাধারণত ৪-৫ বছর+)

স্টাডি গ্যাপ থাকলে আপনার করণীয় কী?

যদি আপনার স্টাডি গ্যাপ থাকে, হতাশ না হয়ে নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করুন:

  • বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ: আপনার গ্যাপের সময়কাল অনুযায়ী জাতীয় বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে টার্গেট করুন।
  • সার্কুলার অনুসরণ: নিয়মিত শিক্ষা বিষয়ক সর্বশেষ খবর রাখুন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
  • দক্ষতা বৃদ্ধি: গ্যাপের সময়টিকে কাজে লাগিয়ে কম্পিউটার, ভাষা বা অন্য কোনো বিষয়ে professional training গ্রহণ করুন, যা আপনার সিভিকে শক্তিশালী করবে।
  • বিকল্প পথ: অনার্স বা ডিগ্রি ছাড়াও বিভিন্ন বিকল্প ক্যারিয়ার পথ রয়েছে। আপনার আগ্রহ অনুযায়ী বিভিন্ন প্রফেশনাল ডিপ্লোমা কোর্স নিয়েও ভাবতে পারেন।

FAQ Section: আরও কিছু সাধারণ প্রশ্ন

প্রশ্ন ১: স্টাডি গ্যাপের জন্য কি ভাইভায় কোনো সমস্যা হয়?

উত্তর: কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় ভাইভা নেওয়া হয়। সেখানে আপনাকে গ্যাপের কারণ জিজ্ঞাসা করা হতে পারে। সততা এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে যৌক্তিক কারণ (যেমন: অসুস্থতা, পারিবারিক সমস্যা, চাকরির প্রস্তুতি) ব্যাখ্যা করতে পারলে কোনো সমস্যা হয় না।

প্রশ্ন ২: সেকেন্ড টাইম ভর্তি পরীক্ষায় কি নম্বর কাটা হয়?

উত্তর: কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে (যেমন: জাহাঙ্গীরনগর) সেকেন্ড টাইমারদের ক্ষেত্রে মোট নম্বর থেকে সামান্য কিছু নম্বর কেটে রাখার নিয়ম প্রচলিত আছে। এটি ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে।

সঠিক তথ্যই আপনার ভবিষ্যতের চাবিকাঠি

আশা করি, কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে সেই সম্পর্কে আপনার সকল দ্বিধা দূর হয়েছে। মনে রাখবেন, একটি স্টাডি গ্যাপ জীবনের শেষ নয়, বরং এটি নতুন করে শুরু করার একটি সুযোগ হতে পারে। হতাশ না হয়ে নিজের যোগ্যতা এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী সেরা সিদ্ধান্তটি নিন।

স্টাডি গ্যাপ নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা বা কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্টে আমাদের জানান। আপনার একটি প্রশ্ন হয়তো আরও অনেকের উপকারে আসবে।

আরও পড়ুনআন্তর্জাতিক চাকরির জন্য সিভি লেখার গোপন কৌশল: নিজেকে গ্লোবাল মার্কেটে সেরা করে তুলুন!

Related Posts

Job Winning Strategy

মার্কেটিং-এ ফ্রেশার জব: ‘অভিজ্ঞতা নেই’—এই চক্র থেকে বের হওয়ার উপায়

ইন্টারভিউ প্রস্তুতি টিপস

ইন্টারভিউ প্রস্তুতির পূর্ণাঙ্গ গাইড (A-Z): টিপস, প্রশ্ন ও উত্তর | Job Interview Guide

ফ্রেশারদের জন্য সিভি লেখার নিয়ম

ফ্রেশারদের জন্য সিভি লেখার নিয়ম: অভিজ্ঞতা ছাড়াই যেভাবে বাজিমাত করবেন

Leave a Comment

Careeren.com হলো বাংলাদেশের কমপ্লিট ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট প্ল্যাটফর্ম। আমরা চাকরির খবর, বিশেষজ্ঞ গাইডলাইন, দক্ষতা উন্নয়ন এবং ইন্টারভিউ প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় সকল রিসোর্স একটি একক প্ল্যাটফর্মে সরবরাহ করি। আপনার পেশাগত সাফল্যের জন্য আমরাই আপনার নির্ভরযোগ্য সঙ্গী