২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষার সিলেবাস নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষার সিলেবাস: পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যসূচিতেই হতে পারে পরীক্ষা
করোনা মহামারি পরবর্তী সময়ে শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং একাডেমিক ক্যালেন্ডার স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষার সিলেবাস পূর্ণাঙ্গ বা ফুল সিলেবাসেই রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, ২০২৬ সালে যারা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন, তাদের সব বিষয়ে এবং পূর্ণ নম্বরেই পরীক্ষা দিতে হবে।
বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ ও ২০২৫ সালের মতো ২০২৬ সালেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের কোনো সুযোগ রাখা হচ্ছে না। এনসিটিবি আগেই জানিয়েছিল যে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে পাবলিক পরীক্ষাগুলো ধীরে ধীরে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে ফিরে যাবে। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৬ সালের পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটি বিষয়ের সব অধ্যায় পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ইংরেজি, বাংলা, আইসিটিসহ গ্রুপ ভিত্তিক বিষয়গুলোতে (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা) ১০০ নম্বরের পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার সময়ও আগের মতো ৩ ঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এনসিটিবির নির্দেশনা ও প্রস্তুতি
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সংশ্লিষ্ট সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দিয়েছে যেন ক্লাসে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস শেষ করার ওপর জোর দেওয়া হয়। ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাস চলছে, এবং ২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষা সাধারণত এপ্রিল বা মে মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের হাতে প্রস্তুতির জন্য খুব বেশি সময় নেই। কলেজগুলোকে নির্বাচনী পরীক্ষার আগেই সিলেবাস সম্পন্ন করার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
যদিও কোনো কোনো মহল থেকে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের দাবি উঠেছিল, কিন্তু শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসের পক্ষেই অটল রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষার সময় পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস থেকে প্রশ্ন করা হয়, তাই এইচএসসি পর্যায়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পড়লে শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে পিছিয়ে পড়ে—এমনটাই মত শিক্ষাবিদদের।
মানবণ্টন ও পরীক্ষার ধরন
২০২৬ সালের পরীক্ষায় সৃজনশীল এবং বহুনির্বাচনি (MCQ)—উভয় অংশই থাকবে। বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়গুলোতে ব্যবহারিক অংশও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
-
সৃজনশীল/রচনামূলক: ৭০ নম্বর (ব্যবহারিক থাকলে ৫০ নম্বর)।
-
বহুনির্বাচনি (MCQ): ৩০ নম্বর (ব্যবহারিক থাকলে ২৫ নম্বর)।
-
ব্যবহারিক: ২৫ নম্বর (প্রযোজ্য বিষয়গুলোর জন্য)।
শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এনসিটিবি বা শিক্ষা বোর্ডের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট nctb.gov.bd-তে সিলেবাস সংক্রান্ত বিস্তারিত নোটিশ এবং বিষয়ভিত্তিক রূপরেখা পাওয়া যাবে। কোনো গুজবে কান না দিয়ে অফিশিয়াল নির্দেশনার ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের মতে, পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিধি বাড়বে এবং তারা উচ্চশিক্ষার জন্য নিজেকে আরও ভালোভাবে প্রস্তুত করতে পারবে।



