চাকরি, দক্ষতা ও এক্সপার্ট ক্যারিয়ার গাইডলাইন

Join us on Telegram

Join Now

Join us on Whatsapp

Join Now

How to Write a CV: জেনে নিন, আদর্শ সিভি লেখার নিয়ম ও কৌশল

সিভি লেখার নিয়ম: একটি আদর্শ সিভি লেখার নিয়ম কী? এই পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন অনুসরণ করে জানুন সিভি তৈরির নিয়ম, কী কী লিখতে হয় এবং সেরা CV ফরম্যাট।

Table of Contents

How to Write a CV

গড়ে একজন নিয়োগকর্তা প্রতিটি সিভির পেছনে মাত্র ৬ থেকে ৭ সেকেন্ড সময় ব্যয় করেন।

একবার ভাবুন, আপনার পুরো শিক্ষাজীবন, আপনার অর্জন করা সমস্ত দক্ষতা আর অভিজ্ঞতার সারসংক্ষেপ মাত্র ছয় সেকেন্ডের মধ্যে মূল্যায়িত হচ্ছে! আপনার সিভি কি এই কঠিন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত? এই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যেই হাজারো প্রার্থীর ভিড়ে কীভাবে নিয়োগকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিজেকে আলাদা প্রমাণ করবেন?

সিভি লেখার নিয়ম ও কৌশল

চাকরির বাজারে আপনার প্রথম প্রবেশদ্বার হলো আপনার সিভি (CV) বা জীবন বৃত্তান্ত। এটি নিছক একটি কাগজ নয়, এটি আপনার ব্যক্তিগত বিপণনের সবচেয়ে শক্তিশালী দলিল। বেশিরভাগ মানুষ সিভিকে তাদের অতীতের ‘ঐতিহাসিক দলিল’ হিসেবে দেখেন এবং শুধু কী কী দায়িত্ব পালন করেছেন তার একটি তালিকা তৈরি করেন। কিন্তু এখানেই সবচেয়ে বড় ভুলটি হয়।

একটি শক্তিশালী সিভি আপনার ইতিহাস বর্ণনা করে না, বরং আপনার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে তুলে ধরে। এটি নিয়োগকর্তাকে দেখায় যে আপনি শুধু কাজই করেননি, আপনি সমস্যা সমাধান করেছেন, প্রতিষ্ঠানে মূল্য সংযোজন করেছেন এবং কাঙ্ক্ষিত ফলাফল এনেছেন।

এই পূর্ণাঙ্গ গাইডটি লেখা হয়েছে বাংলাদেশের চাকরিপ্রার্থী, বিশেষ করে ফ্রেশার এবং প্রারম্ভিক পেশাদারদের কথা মাথায় রেখে। সিভি তৈরির জটিল প্রক্রিয়া নিয়ে আপনার সমস্ত উদ্বেগ দূর করাই এর মূল লক্ষ্য।

এই গাইডে আপনি কী শিখবেন

  • সিভি, রেজুমি এবং বায়োডাটার মধ্যে আসল এবং কার্যকরী পার্থক্য।
  • একটি আদর্শ সিভির প্রতিটি সেকশন বা অংশ ধাপে ধাপে লেখার নিয়ম।
  • সাধারণ ‘দায়িত্বের তালিকা’ থেকে সরে এসে ‘অর্জন’ (Achievements) হাইলাইট করার বিশেষ কৌশল।
  • ফ্রেশার হিসেবে কোনো বাস্তব অভিজ্ঞতা ছাড়াই কীভাবে একটি শক্তিশালী সিভি তৈরি করবেন।
  • বাংলাদেশের চাকরির বাজারের জন্য সেরা CV ফরম্যাট এবং সাধারণ ভুলগুলো যা এড়িয়ে চলতে হবে।

আপনি যদি “সিভি কিভাবে তৈরি করব?” বা “একটি আদর্শ সিভি লেখার নিয়ম কী?” এই প্রশ্নগুলোর বাস্তবসম্মত এবং কার্যকরী উত্তর খোঁজেন, তাহলে এই গাইডটি আপনার জন্যই লেখা হয়েছে।

সিভি (CV) কী? এর বাংলা অর্থ এবং মূল ধারণা

সিভি (CV) শব্দটি একটি ল্যাটিন শব্দগুচ্ছ “Curriculum Vitae” (কারিকুলাম ভিটাই) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এর আভিধানিক বাংলা অর্থ হলো ‘জীবন বৃত্তান্ত’ বা ‘জীবনের পথ’।

সহজ কথায়, একটি সিভি হলো আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাগত অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, অর্জন এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্যের একটি গোছানো লিখিত সারসংক্ষেপ।

তবে আধুনিক পেশাদার জগতে এর গুরুত্ব আরও অনেক গভীর। এটি শুধু তথ্যের সংকলন নয়, এটি নিয়োগকর্তার কাছে আপনার প্রথম পরিচিতি। একটি ভালো সিভি আপনার পেশাদারিত্ব, যোগ্যতা এবং যে পদের জন্য আপনি আবেদন করছেন তার প্রতি আপনার আন্তরিকতা ও গুরুত্বকে প্রমাণ করে। এটি নিয়োগকর্তাকে বোঝাতে সাহায্য করে যে কেন আপনিই ওই পদের জন্য সেরা প্রার্থী। তাই সিভিকে একটি ‘দরজা খোলার চাবি’ হিসেবে দেখা উচিত, যা আপনার জন্য ইন্টারভিউর কল নিয়ে আসবে।

সিভি (CV), রেজুমি (Resume) এবং বায়োডাটা (Biodata): মূল পার্থক্য কী?

চাকরির আবেদন করার সময় আমরা প্রায়ই সিভি, রেজুমি এবং বায়োডাটা—এই তিনটি শব্দ শুনে থাকি। অনেকেই এগুলোকে একে অপরের সমার্থক মনে করেন, কিন্তু এদের মধ্যে উদ্দেশ্য, দৈর্ঘ্য এবং ব্যবহারে সূক্ষ্ম অথচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে।

নিচের টেবিলটি এই পার্থক্যগুলো পরিষ্কারভাবে বুঝতে সাহায্য করবে:

কখন কোনটি ব্যবহার করবেন?

  • কর্পোরেট বা প্রাইভেট চাকরি (বাংলাদেশ): বাংলাদেশে “সিভি” শব্দটি সবচেয়ে বেশি প্রচলিত, যদিও আমরা আসলে যা ব্যবহার করি তা মূলত একটি “রেজুমির” বৈশিষ্ট্য বহন করে (সংক্ষিপ্ত এবং টার্গেটেড)। তাই বাংলাদেশের কর্পোরেট চাকরির জন্য ১-২ পৃষ্ঠার একটি সারসংক্ষেপই যথেষ্ট, যেটিকে আমরা প্রচলিতভাবে “সিভি” বলি।
  • একাডেমিক বা গবেষণা: আপনি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক বা পিএইচডি-এর জন্য আবেদন করেন, তবে আপনাকে একটি বিস্তারিত “একাডেমিক সিভি” তৈরি করতে হবে যেখানে আপনার সমস্ত প্রকাশনা, গবেষণা এবং একাডেমিক অর্জনের তালিকা থাকবে।
  • বিয়ে বা ব্যক্তিগত: বিয়ের উদ্দেশ্যে পাত্র/পাত্রী খোঁজার জন্য বা কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে যেখানে ব্যক্তিগত তথ্য প্রয়োজন, সেখানে অনুসরণ করে একটি বায়োডাটা তৈরি করা হয়।

একটি আদর্শ সিভি তৈরির পূর্বপ্রস্তুতি: লেখা শুরুর আগে করণীয়

একটি ভালো সিভি লেখা শুরু হয় কীবোর্ডে টাইপ করার অনেক আগে। সঠিক প্রস্তুতি আপনার সিভিকে সাধারণ থেকে অসাধারণ করে তুলতে পারে এবং আপনার সময়ও বাঁচাবে।

১. জব ডেসক্রিপশন (Job Description) বিশ্লেষণ করা

এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যা প্রায় সবাই এড়িয়ে যায়। প্রতিটি চাকরির বিজ্ঞাপনে (Job Description বা JD) নিয়োগকর্তা ঠিক কী ধরনের প্রার্থীর সন্ধান করছেন তার একটি স্পষ্ট চিত্র দেওয়া থাকে।

  • কীভাবে করবেন: জব ডেসক্রিপশনটি প্রিন্ট করুন বা একটি আলাদা ডকে কপি করুন।
  • হাইলাইট করুন: “Required Skills” (প্রয়োজনীয় দক্ষতা), “Responsibilities” (দায়িত্ব) এবং “Qualifications” (যোগ্যতা) সেকশনগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
  • কীওয়ার্ড খুঁজুন: এমন শব্দ বা বাক্যাংশ হাইলাইট করুন যা বারবার ব্যবহৃত হয়েছে (যেমন: “Digital Marketing”, “Team Leadership”, “Data Analysis”)। এগুলোই আপনার ‘কীওয়ার্ড’।

২. কীওয়ার্ড রিসার্চ: ATS-এর জন্য প্রস্তুতি

ATS (Applicant Tracking System) হলো একটি সফটওয়্যার যা বড় কোম্পানিগুলো সিভি ফিল্টার করার জন্য ব্যবহার করে। একজন এইচআর ম্যানেজার আপনার সিভি দেখার আগেই, এই সফটওয়্যারটি আপনার সিভি স্ক্যান করে এবং জব ডেসক্রিপশনের সাথে মিল থাকা কীওয়ার্ডগুলো খুঁজে বের করে।

যদি আপনার সিভিতে সঠিক কীওয়ার্ড না থাকে, তবে আপনার সিভিটি হয়তো কোনো মানুষ পড়ার আগেই বাতিল হয়ে যাবে।

করণীয়: জব ডেসক্রিপশন থেকে যে কীওয়ার্ডগুলো হাইলাইট করেছেন, সেগুলো আপনার সিভির ‘Skills’ এবং ‘Work Experience’ সেকশনে সুকৌশলে অন্তর্ভুক্ত করুন। তবে অবশ্যই এমন কোনো দক্ষতা উল্লেখ করবেন না যা আপনার নেই।

৩. আপনার সমস্ত তথ্য এক জায়গায় সংগ্রহ করা

সিভি লেখা শুরুর আগে আপনার ক্যারিয়ারের সমস্ত তথ্য এক জায়গায় গুছিয়ে নিন। এটি সময় বাঁচাবে এবং কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাদ পড়বে না। একটি খসড়া ফাইলে নিচের তথ্যগুলো সংগ্রহ করুন:

  • যোগাযোগের তথ্য: আপনার পুরো নাম, ফোন নম্বর, প্রফেশনাল ইমেইল।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা: ডিগ্রি, প্রতিষ্ঠানের নাম, পাসের সাল, সিজিপিএ (যদি ভালো হয়)।
  • কাজের অভিজ্ঞতা: প্রতিটি পদের নাম, কোম্পানির নাম, কাজের সময়কাল (মাস ও সাল)।
  • অর্জন (Achievements): প্রতিটি পদে আপনার সেরা ২-৩টি অর্জনের কথা ভাবুন (যেমন: সেলস বাড়িয়েছেন, খরচ কমিয়েছেন, নতুন প্রক্রিয়া তৈরি করেছেন)।
  • দক্ষতা (Skills): টেকনিক্যাল বা হার্ড স্কিল (যেমন: Microsoft Excel, Python, SEO) এবং সফট স্কিল (যেমন: Communication, Problem-Solving)।
  • সার্টিফিকেশন ও প্রজেক্ট: যেকোনো প্রাসঙ্গিক কোর্স বা একাডেমিক/ব্যক্তিগত প্রজেক্টের বিবরণ।

সিভি লেখার নিয়ম: একটি আদর্শ সিভির প্রধান সেকশনসমূহ (CV Sections)

প্রস্তুতি শেষ হলে, এবার সিভি তৈরির মূল কাঠামোতে আসা যাক। একটি আদর্শ সিভিতে সাধারণত নিচের সেকশনগুলো থাকে। আসুন, প্রতিটি সেকশন ধাপে ধাপে লেখার নিয়ম জেনে নিই।

সিভি শুরু করার আগে, এই চেকলিস্টটি দেখুন:

১. কন্টাক্ট ইনফরমেশন (Contact Information): যা অবশ্যই থাকতে হবে

এটি আপনার সিভির সবচেয়ে উপরের অংশ। এখানে ভুল হলে নিয়োগকর্তা আপনার সাথে যোগাযোগই করতে পারবেন না।

কী কী অন্তর্ভুক্ত করবেন:

  • পুরো নাম (Full Name): বড় এবং বোল্ড অক্ষরে লিখুন।
  • ফোন নম্বর: একটি সক্রিয় এবং ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর দিন।
  • প্রফেশনাল ইমেইল আইডি: আপনার ইমেইল ঠিকানাটি অবশ্যই প্রফেশনাল হতে হবে।
    • খারাপ উদাহরণ: sweet_boy_rahim@yahoo.com বা princess_pinky@gmail.com
    • ভালো উদাহরণ: rahim.ahmed@gmail.com বা tamanna.sultana@outlook.com
  • ঠিকানা (ঐচ্ছিক): পুরো ঠিকানা লেখার দরকার নেই। শুধু শহরের নাম এবং এলাকা লিখলেই চলে (যেমন: “ধানমন্ডি, ঢাকা”)।
  • লিঙ্কডইন প্রোফাইল (সুপারিশকৃত): আপনার যদি একটি আপ-টু-ডেট লিঙ্কডইন প্রোফাইল থাকে, তবে তার কাস্টমাইজড URL দিন। এটি আপনার পেশাদারিত্ব বাড়িয়ে তোলে। (জানুন: )
  • পোর্টফোলিও/ওয়েবসাইট (যদি থাকে): আপনি যদি ডিজাইনার, ডেভেলপার, লেখক বা ফটোগ্রাফার হন, তবে আপনার কাজের পোর্টফোলিও লিঙ্ক অবশ্যই যোগ করুন।

২. প্রফেশনাল সামারি বা ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ (Professional Summary vs. Career Objective)

কন্টাক্ট ইনফরমেশনের ঠিক নিচেই থাকে এই সেকশন। এটি আপনার সিভির ‘ট্রেইলার’ বা মুখবন্ধ। নিয়োগকর্তা এই অংশ পড়েই সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি আপনার বাকি সিভিটি পড়ার জন্য সময় ব্যয় করবেন কি না।

ফ্রেশারদের জন্য: ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ (Career Objective)

যাদের কোনো কাজের অভিজ্ঞতা নেই বা খুব কম, তারা ‘অবজেক্টিভ’ লিখবেন। এর লক্ষ্য হলো আপনার আগ্রহ, শেখার ইচ্ছা এবং কীভাবে আপনি প্রতিষ্ঠানে অবদান রাখতে চান তা তুলে ধরা।

যে ভুলে ৯০% সিভি বাদ পড়ে]

জেনেরিক ‘Objective’ পরিহার করুন!

একজন এইচআর প্রফেশনাল হিসেবে আমি শত শত সিভিতে এই গতানুগতিক লাইনটি দেখেছি: “To work in a challenging environment where I can utilize my skills and grow.”

এটি একটি অর্থহীন এবং জেনেরিক কথা, যা আপনার সম্পর্কে নিয়োগকর্তাকে কিছুই বলে না। এর পরিবর্তে, আপনি কী করতে পারেন এবং কেন আপনি ওই নির্দিষ্ট কোম্পানির জন্য উপযুক্ত, তার ওপর ফোকাস করুন।

  • দুর্বল অবজেক্টিভ: “A challenging position seeking to utilize my skills.”
  • টার্গেটেড অবজেক্টিভ (ফ্রেশার): “A highly motivated Business graduate with strong analytical skills, seeking a Junior Analyst position at [Company Name]. Eager to apply my knowledge of market research and data analysis to help optimize your marketing campaigns.”

অভিজ্ঞদের জন্য: প্রফেশনাল সামারি

যাদের ২ বা ততোধিক বছরের অভিজ্ঞতা আছে, তারা ‘অবজেক্টিভ’-এর বদলে ‘প্রফেশনাল সামারি’ লিখবেন। এটি ৩-৪ লাইনের একটি শক্তিশালী প্যারাগ্রাফ যা আপনার ক্যারিয়ারের সেরা অর্জনগুলো হাইলাইট করে।

  • ভালো উদাহরণ (অভিজ্ঞ): “Results-driven Digital Marketing Manager with 5+ years of experience in SEO, SEM, and content strategy. Successfully led a team to increase organic traffic by 150% and conversion rates by 35% for [Previous Company]. Seeking to leverage my expertise to drive growth at [Target Company].”

৩. কাজের অভিজ্ঞতা (Work Experience): সিভির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ

এটি আপনার সিভির প্রাণ। নিয়োগকর্তারা এই সেকশনে সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করেন।

  • ফরম্যাট: সবসময় ‘Reverse-Chronological Order’ বা সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা প্রথমে—এই ফরম্যাট অনুসরণ করুন। আপনার বর্তমান বা সর্বশেষ চাকরিটি প্রথমে থাকবে, তারপর তার আগেরটি।
  • উপাদান: প্রতিটি অভিজ্ঞতার জন্য লিখুন:
    • পদের নাম (Job Title)
    • কোম্পানির নাম (Company Name)
    • কাজের সময়কাল (Start Date – End Date) (যেমন: জানুয়ারি ২০২১ – বর্তমান)
  • দায়িত্বের বদলে ‘অর্জন’ (Achievements) লিখুন:
    • দুর্বল (দায়িত্ব): “ফেসবুক পেজ ম্যানেজ করতাম।”
    • শক্তিশালী (অর্জন): “ফেসবুক পেজের জন্য কন্টেন্ট স্ট্র্যাটেজি তৈরি ও বাস্তবায়ন করেছি, যার ফলে ৬ মাসে অর্গানিক রিচ ২০০% বৃদ্ধি পেয়েছে।”
    • দুর্বল (দায়িত্ব): “কাস্টমারদের কল রিসিভ করতাম।”
    • শক্তিশালী (অর্জন): “প্রতিদিন গড়ে ৫০+ কাস্টমার কল সফলভাবে সমাধান করেছি, যার ফলে কাস্টমার সন্তুষ্টি রেটিং ১০% বৃদ্ধি পেয়েছে।”

PAR মেথড (Problem-Action-Result) দিয়ে আপনার অভিজ্ঞতাকে আকর্ষণীয় করুন

আপনার অর্জনগুলো লেখার সেরা উপায় হলো PAR মেথড। এটি নিয়োগকর্তাকে আপনার কাজের পেছনের গল্পটি বুঝতে সাহায্য করে।

  • P (Problem): আপনি কোন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন? (যেমন: বিক্রয় কমে যাচ্ছিল)
  • A (Action): আপনি কী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন? (যেমন: একটি নতুন সেলস ফানেল ডিজাইন করেছি)
  • R (Result): আপনার পদক্ষেপের ফলে কী ফলাফল এসেছে? (যেমন: ৩ মাসে বিক্রয় ২০% বৃদ্ধি পেয়েছে)

সিভিতে লেখার সময়: শুধু Action এবং Result লিখুন, যেমন: “একটি নতুন সেলস ফানেল ডিজাইন ও বাস্তবায়ন করে ৩ মাসে বিক্রয় ২০% বৃদ্ধি করেছি।”

অভিজ্ঞতা হাইলাইট করার জন্য পাওয়ারফুল অ্যাকশন ভার্ব (Action Verbs)

আপনার অর্জনের প্রতিটি বুলেট পয়েন্ট একটি শক্তিশালী ‘অ্যাকশন ভার্ব’ বা ক্রিয়াপদ দিয়ে শুরু করুন। “I was responsible for…” (আমার দায়িত্ব ছিল…) এর পরিবর্তে সরাসরি ভার্ব ব্যবহার করুন।

ফ্রেশারদের জন্য: আপনার যদি প্রথাগত ‘কাজের অভিজ্ঞতা’ না থাকে, তবে এই সেকশনটি বাদ দেবেন না। এর পরিবর্তে সেকশনের নাম দিন “প্রজেক্টস ও ইন্টার্নশিপ” বা “প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা”। এখানে আপনার ভার্সিটির প্রজেক্ট, ইন্টার্নশিপ, ভলান্টিয়ারি কাজ বা ফ্রিল্যান্স কাজের বিবরণ দিন।

৪. শিক্ষাগত যোগ্যতা (Education)

এই সেকশনটিও ‘Reverse-Chronological’ অর্ডারে লিখুন (সর্বশেষ ডিগ্রি প্রথমে)।

কী লিখবেন:

  • ডিগ্রির নাম (যেমন: B.Sc. in Computer Science & Engineering)
  • প্রতিষ্ঠানের নাম (যেমন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
  • পাসের সাল বা অধ্যয়নের সময়কাল (যেমন: ২০১৬ – ২০২০)

CGPA কখন উল্লেখ করবেন?

  • বিশেষ পরামর্শ: আপনার সিজিপিএ যদি খুব ভালো হয় (যেমন: ৩.৫০ বা তার বেশি) তবে অবশ্যই উল্লেখ করুন।
  • যদি সিজিপিএ তুলনামূলকভাবে কম হয় (যেমন: ৩.০ এর নিচে) এবং চাকরির বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করার বাধ্যবাধকতা না থাকে, তবে এটি বাদ দেওয়াই ভালো। আপনার ‘Skills’ এবং ‘Projects’-এর ওপর বেশি গুরুত্ব দিন।

৫. দক্ষতা (Skills Section): হার্ড স্কিল বনাম সফট স্কিল

এটি সিভির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেকশন, যা ATS ফিল্টারিং-এ বড় ভূমিকা রাখে। এখানে আপনার দক্ষতার একটি তালিকা দিন, যা অবশ্যই জব ডেসক্রিপশনের সাথে প্রাসঙ্গিক হতে হবে।

  • হার্ড স্কিল (Hard Skills): এগুলো হলো নির্দিষ্ট, পরিমাপযোগ্য এবং শেখা যায় এমন দক্ষতা।
    • উদাহরণ: Microsoft Office (Excel, PowerPoint), Python, Java, Adobe Photoshop, SEO/SEM, Google Analytics, Content Writing, Financial Modeling।
  • সফট স্কিল (Soft Skills): এগুলো হলো ব্যক্তিগত এবং আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতা, যা যেকোনো চাকরিতেই প্রয়োজন।
    • উদাহরণ: Communication (যোগাযোগ), Leadership (নেতৃত্ব), Problem-Solving (সমস্যা সমাধান), Teamwork (দলবদ্ধভাবে কাজ), Time Management (সময় ব্যবস্থাপনা), Adaptability (অভিযোজনযোগ্যতা)।

করণীয়: জব ডেসক্রিপশন থেকে পাওয়া কীওয়ার্ড স্কিলগুলো এখানে তালিকাভুক্ত করুন। ৫-১০টি সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক স্কিলের একটি মিশ্র তালিকা তৈরি করুন।

৬. অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সেকশন (Optional Sections)

আপনার সিভিকে আরও শক্তিশালী করতে এবং অন্যদের থেকে আলাদা করতে এই সেকশনগুলো যোগ করতে পারেন।

  • সার্টিফিকেশন এবং কোর্স (Certifications & Courses): আপনি যদি কোনো প্রফেশনাল কোর্স (যেমন: Google Digital Marketing Certificate, PMP) করে থাকেন, তা এখানে উল্লেখ করুন।
  • প্রজেক্টস (Projects): ফ্রেশারদের জন্য এটি ‘কাজের অভিজ্ঞতা’র বিকল্প। আপনার সেরা একাডেমিক বা ব্যক্তিগত প্রজেক্টগুলো এখানে বিস্তারিত লিখুন (PAR মেথড ব্যবহার করতে পারেন)।
  • অ্যাওয়ার্ডস এবং সম্মাননা (Awards & Recognitions): ডিন’স অ্যাওয়ার্ড, স্কলারশিপ বা কোনো প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হলে তা উল্লেখ করুন।
  • ভলান্টিয়ারি অভিজ্ঞতা (Volunteering Experience): এটি আপনার সফট স্কিল (যেমন: নেতৃত্ব, টিমওয়ার্ক) প্রমাণ করে।

৭. রেফারেন্স (References): সিভিতে কখন এবং কিভাবে যোগ করবেন?

একটি সাধারণ প্রশ্ন হলো, “সিভিতে কি রেফারেন্স যোগ করব?”

সঠিক নিয়ম: আপনার সিভির মূল্যবান জায়গা বাঁচানোর জন্য রেফারেন্স সেকশন যোগ করার দরকার নেই। নিয়োগকর্তারা সাধারণত ইন্টারভিউর পরবর্তী ধাপে রেফারেন্স চান।

আপনি সিভির শেষে শুধু একটি লাইন লিখতে পারেন: “References available upon request.” (চাহিবা মাত্র রেফারেন্স প্রদান করা হবে।)

সিভি কিভাবে তৈরি করব? ধাপে ধাপে একটি পূর্ণাঙ্গ সিভি বানানোর প্রক্রিয়া

এখন আপনি জানেন সিভির প্রতিটি সেকশনে কী লিখতে হবে। চলুন, পুরো প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে দেখি।

ধাপ ১: সঠিক CV Format (ফরম্যাট) নির্বাচন করা

তিন ধরনের প্রধান সিভি ফরম্যাট রয়েছে:

  1. রিভার্স-ক্রনোলজিক্যাল (Reverse-Chronological): সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত। এতে আপনার সাম্প্রতিক কাজের অভিজ্ঞতা প্রথমে থাকে। বেশিরভাগ পেশার জন্য এটিই সেরা।
  2. ফাংশনাল (Functional): এটি অভিজ্ঞতার চেয়ে দক্ষতার ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়। যারা ক্যারিয়ার পরিবর্তন করছেন বা গ্যাপ আছে, তাদের জন্য এটি ভালো।
  3. হাইব্রিড (Hybrid): এটি উপরের দুটি ফরম্যাটের মিশ্রণ।

সুপারিশ: বাংলাদেশের প্রায় ৯০% চাকরির জন্য রিভার্স-ক্রনোলজিক্যাল ফরম্যাটটিই সবচেয়ে নিরাপদ এবং কার্যকর।

ধাপ ২: একটি ক্লীন এবং প্রফেশনাল ডিজাইন বা টেমপ্লেট বাছাই করা

আপনার সিভির ডিজাইন যেন এর কন্টেন্ট পড়তে বাধা না দেয়।

  • ফন্ট: প্রফেশনাল ফন্ট ব্যবহার করুন (যেমন: Calibri, Arial, Helvetica, Roboto)।
  • ফন্ট সাইজ: হেডিং-এর জন্য ১৪-১৬ পয়েন্ট এবং মূল লেখার জন্য ১০-১২ পয়েন্ট রাখুন।
  • সাদা জায়গা (White Space): সিভিটি যেন দেখতে গোছানো লাগে, সেজন্য লাইনের মধ্যে এবং সেকশনের মধ্যে পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা রাখুন।
  • ডিজাইন: অতিরিক্ত রঙ বা গ্রাফিক্স ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। একটি ছিমছাম, প্রফেশনাল লুক বজায় রাখুন।
  • আপনি চাইলে দেখে ধারণা নিতে পারেন।

ধাপ ৩: ড্রাফট লেখা এবং PAR মেথড প্রয়োগ করা

এই গাইডের সেকশনগুলো অনুসরণ করে আপনার সিভির প্রথম ড্রাফটটি লিখুন। বিশেষ করে ‘Work Experience’ সেকশনে PAR মেথড প্রয়োগ করতে ভুলবেন না।

ধাপ ৪: প্রুফরিডিং এবং বানান পরীক্ষা করা

বানান বা ব্যাকরণগত ভুল একটি সিভির সবচেয়ে বড় শত্রু। এটি আপনার অমনোযোগিতা এবং অপেশাদারিত্ব প্রকাশ করে।

  • নিজে পড়ুন: লেখা শেষ করে অন্তত দুবার পড়ুন।
  • অন্যকে দিন: আপনার বন্ধু, সিনিয়র বা শিক্ষককে দিয়ে সিভিটি চেক করান।
  • টুলস ব্যবহার করুন: Grammarly-এর মতো টুলস ব্যবহার করে ইংরেজি বানান ও ব্যাকরণ পরীক্ষা করে নিন।

ধাপ ৫: পিডিএফ (PDF) ফরম্যাটে সেভ করা

সিভি তৈরি শেষ হলে এটিকে সবসময় পিডিএফ (PDF) ফরম্যাটে সেভ করুন।

  • কেন? PDF ফরম্যাট আপনার সিভির ডিজাইন এবং ফন্ট সব ডিভাইসে একই রকম রাখে। Word (doc/docx) ফাইলে পাঠালে তা অন্য কম্পিউটারে ওপেন করলে ফরম্যাটিং ভেঙে যেতে পারে।
  • ফাইলের নাম: ফাইলের একটি প্রফেশনাল নাম দিন।
    • খারাপ নাম: My_CV_final.pdf বা CV_1.pdf
    • ভালো নাম: Rahim_Ahmed_CV_Marketing.pdf বা CV_Tamanna_Sultana.pdf

সিভির সেরা ফরম্যাট (Best CV Format in Bangladesh): কোনটি বেছে নেবেন?

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, নিয়োগকর্তারা একটি সহজ, পাঠযোগ্য এবং তথ্যবহুল সিভি পছন্দ করেন।

  • সেরা ফরম্যাট: রিভার্স-ক্রনোলজিক্যাল (Reverse-Chronological)।
  • ডিজাইন: ক্লীন, মিনিমাল এবং প্রফেশনাল।
  • ফন্ট: স্ট্যান্ডার্ড এবং সহজে পড়া যায় এমন ফন্ট।

এক পৃষ্ঠার সিভি বনাম দুই পৃষ্ঠার সিভি: কোনটি ভালো?

এটি একটি বহুল আলোচিত প্রশ্ন। এর সহজ উত্তর হলো:

  • ফ্রেশার এবং প্রারম্ভিক পেশাদার (০-৮ বছরের অভিজ্ঞতা): আপনার সিভি অবশ্যই ১ পৃষ্ঠার মধ্যে হওয়া উচিত। এটি আপনাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের ওপর ফোকাস করতে বাধ্য করবে।
  • অভিজ্ঞ পেশাদার (১০+ বছরের অভিজ্ঞতা): আপনার যদি দীর্ঘ এবং সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার থাকে, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অর্জন থাকে, তবে ২ পৃষ্ঠার সিভি গ্রহণযোগ্য। তবে কোনো অবস্থাতেই ২ পৃষ্ঠার বেশি হওয়া উচিত নয়।

মনে রাখবেন, নিয়োগকর্তার সময় কম। অপ্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে সিভি দীর্ঘ করার চেয়ে, সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক অর্জনগুলো এক পৃষ্ঠায় তুলে ধরাই বুদ্ধিমানের কাজ।

সিভির সাধারণ ভুলসমূহ: যে কারণে আপনার সিভি বাদ পড়তে পারে

অনেক প্রতিভাবান প্রার্থীও কিছু সাধারণ ভুলের কারণে ইন্টারভিউ কল পান না। নিশ্চিত করুন আপনি এই ভুলগুলো করছেন না:

  • ১. বানান এবং ব্যাকরণগত ভুল (Typos & Grammatical Errors): এটি সবচেয়ে বড় ভুল এবং অপেশাদারিত্বের চূড়ান্ত নিদর্শন।
  • ২. জেনেরিক বা সবার জন্য একই সিভি পাঠানো: প্রতিটি চাকরির জন্য সিভিকে অবশ্যই সেই জব ডেসক্রিপশন অনুযায়ী কিছুটা পরিবর্তন (Customize) করতে হবে।
  • ৩. অপ্রফেশনাল ইমেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার করা: (যেমন: cool.boy@...)।
  • ৪. অতিরিক্ত ডিজাইন বা রঙের ব্যবহার: সিভি একটি আর্ট প্রজেক্ট নয়। পাঠযোগ্যতা (Readability) সবার আগে।
  • ৫. মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত তথ্য প্রদান: ইন্টারভিউতে ধরা পড়লে তা আপনার ক্যারিয়ারের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হবে।
  • ৬. কন্টাক্ট ইনফরমেশনে ভুল থাকা: আপনার ফোন নম্বর বা ইমেইলে ভুল থাকলে নিয়োগকর্তা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন না।
  • ৭. অস্পষ্ট ফন্ট বা খুব ছোট ফন্ট সাইজ: সিভি পড়া যেন চোখের জন্য আরামদায়ক হয়।
  • ৮. PDF ফরম্যাটে না পাঠানো: Word ফাইলে পাঠালে ফরম্যাটিং নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

নিয়োগকর্তারা সিভিতে কী খোঁজেন?

ATS ও কীওয়ার্ডের গুরুত্ব

আধুনিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ATS (Applicant Tracking System) একটি বড় ভূমিকা রাখে। এই সফটওয়্যারটি আপনার সিভিকে স্ক্যান করে এবং জব ডেসক্রিপশনের সাথে প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ডের মিল খোঁজে।

লিঙ্কডইন (LinkedIn)-এর একটি তথ্যমতে, যে সিভিগুলোতে নির্দিষ্ট ‘Skills’ (দক্ষতা) তালিকাভুক্ত থাকে এবং তা জব ডেসক্রিপশনের সাথে মিলে যায়, সেগুলোতে ইন্টারভিউ কল পাওয়ার সম্ভাবনা ২৭% বেশি থাকে।

এর অর্থ কী? আপনি যদি ‘Data Analyst’ পদের জন্য আবেদন করেন, তবে আপনার সিভিতে “Data Analysis”, “SQL”, “Python” বা “Tableau”-এর মতো কীওয়ার্ড থাকা অপরিহার্য। জব ডেসক্রিপশনই হলো আপনার কীওয়ার্ড রিসার্চের সেরা উৎস।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) – সিভি লেখার নিয়মাবলী

সিভি লেখা নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও তার উত্তর নিচে দেওয়া হলো:

প্রশ্ন: সিভি এবং রেজুমির মধ্যে প্রধান পার্থক্য কী? উত্তর: প্রধান পার্থক্য হলো দৈর্ঘ্য এবং উদ্দেশ্যে। একটি রেজুমি (Resume) সাধারণত ১ পৃষ্ঠার হয় এবং এটি নির্দিষ্ট চাকরির জন্য সংক্ষিপ্তভাবে লেখা হয়। একটি সিভি (CV) দীর্ঘ (২+ পৃষ্ঠা) হতে পারে এবং এতে আপনার সম্পূর্ণ একাডেমিক ও পেশাগত জীবনের বিস্তারিত বিবরণ থাকে (যেমন: গবেষণা, প্রকাশনা)। তবে বাংলাদেশে আমরা ‘সিভি’ বললেও মূলত ‘রেজুমির’ ফরম্যাটই অনুসরণ করি। (বিস্তারিত জানুন: )

প্রশ্ন: ফ্রেশার হিসেবে সিভিতে কী লিখব যখন কোনো অভিজ্ঞতা নেই? উত্তর: আপনার ‘কাজের অভিজ্ঞতা’ না থাকলেও আপনার ‘অভিজ্ঞতা’ আছে। ফোকাস করুন: ১. প্রজেক্টস (Projects): আপনার সেরা একাডেমিক বা ব্যক্তিগত প্রজেক্টগুলো বিস্তারিত লিখুন। ২. ইন্টার্নশিপ/ভলান্টিয়ারিং: যেকোনো ইন্টার্নশিপ বা স্বেচ্ছাসেবী কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরুন। ৩. দক্ষতা (Skills): জব ডেসক্রিপশনের সাথে মেলে এমন হার্ড স্কিল (যেমন: Excel, Python) এবং সফট স্কিল (যেমন: Problem-Solving) হাইলাইট করুন। ৪. শক্তিশালী অবজেক্টিভ: একটি টার্গেটেড ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ লিখুন।

প্রশ্ন: সিভিতে কি ছবি যোগ করা উচিত? (বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে) উত্তর: এটি নির্ভর করে।

  • কর্পোরেট/আইটি/ব্যাংকিং: বেশিরভাগ প্রফেশনাল ক্ষেত্রে (বিশেষ করে বহুজাতিক কোম্পানি বা আইটি ফার্মে) সিভিতে ছবি যোগ না করাই স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস। এতে পক্ষপাতিত্বের (bias) সুযোগ কমে।
  • কখন দেবেন: যদি চাকরির বিজ্ঞাপনে স্পষ্টভাবে ছবি চাওয়া হয়, অথবা যদি এটি কাস্টমার-ফেসিং রোল হয় (যেমন: সেলস, ফ্রন্ট ডেস্ক, মিডিয়া), তবে একটি প্রফেশনাল পাসপোর্ট সাইজের ছবি যোগ করা যেতে পারে।

প্রশ্ন: সিভি কত পৃষ্ঠার হওয়া উচিত? উত্তর: ফ্রেশার এবং ১০ বছরের কম অভিজ্ঞদের জন্য সর্বোচ্চ ১ পৃষ্ঠা। খুব সিনিয়র বা একাডেমিক পদের জন্য সর্বোচ্চ ২ পৃষ্ঠা।

প্রশ্ন: সিভি বানানোর জন্য সেরা সফটওয়্যার বা ওয়েবসাইট কোনটি? উত্তর: আপনি Microsoft Word বা Google Docs ব্যবহার করে খুব ভালো সিভি তৈরি করতে পারেন। এগুলোতে ফরম্যাTING-এর ওপর আপনার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে। এছাড়া Canva বা Zety-এর মতো অনলাইন সিভি বিল্ডারও রয়েছে, তবে অনেক সময় এগুলো ATS-ফ্রেন্ডলি হয় না।

ক্যারিয়ার থেকে আরওসিভি এবং রেজুমির মধ্যে পার্থক্য: কোনটি কখন ব্যবহার করবেন?

Related Posts

Job Winning Strategy

মার্কেটিং-এ ফ্রেশার জব: ‘অভিজ্ঞতা নেই’—এই চক্র থেকে বের হওয়ার উপায়

ইন্টারভিউ প্রস্তুতি টিপস

ইন্টারভিউ প্রস্তুতির পূর্ণাঙ্গ গাইড (A-Z): টিপস, প্রশ্ন ও উত্তর | Job Interview Guide

ফ্রেশারদের জন্য সিভি লেখার নিয়ম

ফ্রেশারদের জন্য সিভি লেখার নিয়ম: অভিজ্ঞতা ছাড়াই যেভাবে বাজিমাত করবেন

Leave a Comment

Careeren.com হলো বাংলাদেশের কমপ্লিট ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট প্ল্যাটফর্ম। আমরা চাকরির খবর, বিশেষজ্ঞ গাইডলাইন, দক্ষতা উন্নয়ন এবং ইন্টারভিউ প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় সকল রিসোর্স একটি একক প্ল্যাটফর্মে সরবরাহ করি। আপনার পেশাগত সাফল্যের জন্য আমরাই আপনার নির্ভরযোগ্য সঙ্গী